শনিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১২

তৃষ্ণাই নেই!

একে একে সবারই বিয়ে হয়ে গেছে; কিন্তু মোকলেসটা কিছুতেই বিয়ে করছে না। ব্যাপারটা নিয়ে সবাই পেরেশান। এমনই এক দিনের কথা। মোকলেসের বন্ধু তবারক মিয়াকে ডেকে মোকলেসের মা বললেন, 'বাবা, তুমি তোমার বন্ধুকে একটু বোঝাও। আমার একমাত্র ছেলে যদি বিয়ে না করে তাহলে বংশ রক্ষা করবে কে?' মোকলেসের মায়ের মর্মস্পর্শী বক্তব্য শোনার পর তবারক মিয়া ঠিক করলেন তিনি মোকলেসকে এবার যেভাবেই হোক বিয়ে করিয়ে ছাড়বেন।
যেমন ভাবা তেমন কাজ। এক বিকেলে মোকলেসকে নিজের বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে তবারক মিয়া বললেন, 'এবার একটা বিয়ে কর। বিয়ে করার অনেক সুবিধা। বউ যখন বাসায় থাকবে তখন অফিস থেকে ফিরে দেখবি টেবিলে খাবার রেডি। খানা নিয়ে আর কোনো চিন্তা করতে হবে না।' মোকলেস কপাল কুঁচকে জবাব দিলেন, 'আমি তো রাতে বাইরে থেকে খেয়ে আসি। আমার টেবিলে খাবার রাখার জন্য কাউকে দরকার নেই।'
তবারক হারবার পাত্র নন। তিনি বললেন, 'আচ্ছা বেশ, মনে কর অর্ধেক গোসল করার পর মনে পড়ল তুই বাথরুমে তোয়ালে আনিসনি। বউ থাকলে তুই সহজেই সেটা চেয়ে নিতে পারবি।' মোকলেস বললেন, 'এমনটা কখনোই হয় না, কারণ আমার বাথরুমে সব সময় তোয়ালে থাকে।' মোকলেস বললেন, 'সারাটা জীবন একা একাই কাটাবি? ভেবে দেখ, তুই যখন মরণশয্যায়, তখন তোর মুখে পানি দেওয়ার মতো কেউ থাকবে না।' এবার মোকলেস আর কোনো যুক্তি দেখাতে পারলেন না। তিনি বিয়েতে রাজি হয়ে গেলেন।
অনেক বছর পরের কথা। দীর্ঘ সংসার জীবনযাপনের পর মোকলেস বৃদ্ধ অবস্থায় শুয়ে আছেন মৃত্যুর অপেক্ষায়। তাঁকে ঘিরে আছেন তাঁর স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে। কিন্তু মোকলেস শুয়ে শুয়ে ভাবছেন, 'কেন যে বিয়ে করেছিলাম! পানি খেতে ইচ্ছে করছে না তো!'
* মেহেদী আল মাহমুদ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন